হিফজ ছাত্রদের মেহনতের পদ্ধতি,,,
জাকারিয়া আল হোসাইনী বরগুনা
১/ হাফেজ ছাত্ররা প্রতিদিন এক / আধা পাড়া উস্তাদকে পড়া শুনাবে। (বিনা লোকমায় এবং বিনা টোকায়)
সবকী ছাত্ররা সবক, সাতসবক, আমুখতা শুনাবে।(বিনা লোকমায় এবং বিনা টোকায়)।
২/ইয়াদ করার সময় প্রত্যেকটি শব্দ বাক্যকে কমপক্ষে ৩০/৪০/৫০ বার করে বার বার পড়বে, উদাহরণস্বরূপঃ
الحمد لله. الحمد لله. الحمد لله. الحمد لله.الحمد لله…..
.رب العالمين. رب العالمين. رب العالمين. رب العالمين. رب العالمين….
الحمد لله رب العالمين. الحمد لله رب العالمين. الحمد لله رب العالمين…..
এভাবে বার বার পড়ার পর ১ বার না দেখে পরবে,,,, যদি প্রত্যেকটি হরফ, হরকত, নুকতা, শব্দ, বাক্য, চোখে ভাসে তাহলে ইয়াদ হয়েছে আর না হয় আবার নতুন করে প্রত্যেকটি শব্দ বাক্যকে ১০/২০ বার পড়বে। এভাবে ১ পারা ইয়াদ করতে ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময় লাগবে।
৩/ হাফেজ ছাত্ররা নিয়মিত কমপক্ষে ১০ পারা এবং সবকী ছাত্ররা কমপক্ষে ৭ পারা তিলাওয়াত দেখে দেখে করবে।
৪/এশার নামাজের পর নিয়মিত ১ পারা নামাজে তিলাওয়াত করবে।
৫/আসরের পর ১৫ মিনিট দুইজন ছাত্র পরষ্পর প্রশ্ন পরবে।
৬/ খাবার সময়,অবসর সময়গুলোতে, বিশ্ববিখ্যাত হাফেজ ক্বারী যারা আছেন যেমনঃ( শায়খ মাহমূদ খালিল আল হুসারী রহঃ, শায়খ মুহাম্মাদ সিদ্দিক আল মিনশাবি রহঃ, শায়খ মুহাম্মাদ আইয়ূব রহঃ, শায়খ রাশেদ মাশারী আল আফাসী, শায়খ আব্দুর রহমান আস সুদাইস , শায়খ আলী আল হুজাইফী, শায়খ সাউদ বিন ইব্রাহীম আশ শুরাইম, শায়খ আলী জাবের, শায়খ বান্দার বিন আব্দুল আজিজ আল বালিলাহ, শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি, শায়খ আব্দুল ওয়ালী আল আরাকানী, শায়খ সালেহ আল আনসারী, শায়খ ইসমাতুল্লাহ , শায়খ মুহাম্মাদ জিবরাঈল, শায়খ আব্দুল্লাহ বাসফার হাফিজাহুমুল্লাহ ) সহ এধরনের আরো যারা রয়েছেন উনাদের তিলাওয়াত খুব বেশি শুনবে। সম্ভব হলে ভিডিও তিলাওয়াত দেখবে। এবং বাংলাদেশের যারা বিশ্বজয় করেছে তাদের প্রতিযোগিতার তিলাওয়াত শুনবে অথবা দেখবে। যেমন: বাহরাইন, দুবাই , কুয়েত,সৌদি আরব ,কাতার, জর্ডান ,মিশর সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীতার তিলাওয়াত।
৭/ ইজতিমায়ী মাশক্বের ইহতিমাম করবে।
৮/ ইনফিরাদী বা একাকী আন্তর্জাতিক মানের হাফেজ ক্বারী উস্তাদের কাছে দৈনন্দিন এক পৃষ্ঠা করে মাশক্বের তিলাওয়াত শুনাবে।
৯/ফজরের রয়েছে ২ রাকাত সুন্নাহ নামাজ,যোহরের ৬ রাকাত, মাগরিবের ২ রাকাত, এশার ২ রাকাত সুন্নাহ নামাজ এবং ৩ রাকাত বিতর নামাজ। এই নামাজগুলোর প্রত্যেক রাকাতে এক পৃষ্ঠা করে মোট ১৫ পৃষ্ঠা সুন্নাহ এবং বিতর নামাজে তিলাওয়াত করবে।এবং ঘুমানোর সময় সিটে বসে ৫ পৃষ্ঠা তিলাওয়াত করবে, এভাবে ১ পারা তিলাওয়াত পূর্ণ হলো।
১০/ হাটতে, চলতে, উঠতে, বসতে,মনে মনে দিনে রাতে ১ পারা তিলাওয়াত করবে।
১১/ সম্ভব হলে প্রতি সপ্তাহে না হয় অন্তত প্রতি মাসে একবার বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজ পরে নফল নামাজে দাড়াবে এবং শুক্রবার ফজর পর্যন্ত ১৫ পারা অথবা সম্ভব হলে এক খতম নামাজে তিলাওয়াত করবে।
১২/ যেকোনো একজন বিশ্ববিখ্যাত হাফেজ ক্বারীর তিলাওয়াতের সুর হুবহু তাকলিদ অথবা অনুসরণ করবে। অতঃপর নিজস্ব কিছু সুর সংযোজন করবে ।
১৩/ মাখারিজ,সিফাতসমূহ আয়ত্ত করবে।
১৪/ যথাসম্ভব একজন উস্তাদের কাছেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করবে।
১৫/ অবশ্যই তাহাজ্জুদের নামাজ পরবে।
১৬/বিশুদ্ধ নিয়ত করবে।
একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই মহাগ্রন্থ আল কুরআন শিখবে।
১৭/প্রতিদিন অল্প সময় হলেও ওভার টাইম পরার অভ্যাস করবে।
১৮/ পড়া লেখার বিষয়ে উস্তাদের পরামর্শ মেনে চলবে।
১৯/ সর্বদা পাক পবিত্র এবং অজু অবস্থায় থাকবে।
২০/ বেশি বেশি رب زدني علما পড়বে এবং যেকোনো দুরুদ পাঠ করবে।
২১/ উত্তম আখলাক,আদব, ইজতিহাদ,এবং ইত্তেবায়ে সুন্নাহর ইহতিমাম করবে।
২২/ ধারাবাহিকভাবে একাগ্রচিত্তে মেহনত করবে।
২৩/ উস্তাদের খিদমত করবে।
২৪/ সিজদায় পড়ে আল্লাহর কাছে ইলমের জন্য দোয়া করবে।
২৫/ মাদ্রাসার যেকোনো কাজকে নিজের জন্য সৌভাগ্যের, সাওয়াবের এবং উপকারী মনে করে মুহাব্বাত নিয়ে করবে।
২৬/ সম্ভব হলে মাদ্রাসার টয়লেট সাফাই করবে এই নিয়তে যেনো আল্লাহ অন্তরের ময়লা দূর করে সিনায় কুরআন বসিয়ে দেন।
২৭/ যখনই পড়ায় অমনোযোগ আসবে সাথে সাথে দুই রাকাত সালাতুল হাজত আদায় করবে, এবং বেশি বেশি পরবে
أعوذ بالله من الشيطان الرجيم
২৮/ ইশরাকের নামাজ আদায় করবে।
২৯/ মিসওয়াক করবে এবং পাগড়ি পরিধান করবে।
৩০/ ছোট বড় যে কোনো গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলবে।
والله اعلم بالصواب
Nazmul Islam 















